ধ্বনি ও ধ্বনির শ্রেণীবিভাগ(স্বরধ্বনির শ্রেণীবিভাগ)
ধ্বনির সংজ্ঞা: বাগ্ যন্ত্রের সাহায্যে উচ্চারিত
ভাষার ক্ষুদ্রতম অর্থপূর্ণ একক হল ধ্বনি।
যেমন--অ,আ,ক,খ........ইত্যাদি।
ধ্বনির লিখিত রূপকে বলা হয় বর্ণ।
ধ্বনি হলো কানে শোনার বিষয় আর বর্ণ হলো যে ধ্বনি আমরা শুনছি তার লিখিত রূপ।
ধ্বনির শ্রেণীবিভাগ: ধ্বনিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয় স্বরধ্বনি ও ব্যঞ্জনধ্বনি।
১)স্বরধ্বনি:যে সকল ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বাসবায়ু বাগ্ যন্ত্রের বিশেষ কোথাও বাধা পায়না এবং উচ্চারণের সময় অন্য কোনো ধ্বনির সাহায্যের প্রয়োজন হয়না তাদেরকে বলা হয় স্বরধ্বনি।
যেমন--অ,ই,উ...ইত্যাদি।
স্বরধ্বনি কে আবার দুই ভাগে ভাগ করা হয়----
মৌলিক স্বরধ্বনি:যে স্বরধ্বনি গুলিকে বিশ্লেষণ বা ভাঙা যায়না তাদেরকে বলা হয় মৌলিক স্বরধ্বনি।যেমন--অ,আ,ই,উ,এ,অ্যা,ও।
যৌগিক স্বরধ্বনি:যে স্বরধ্বনি গুলিকে বিশ্লেষণ করা যায় বা ভাঙা যায় তাদেরকে বলা হয় যৌগিক স্বরধ্বনি।যেমন--ঐ,ঔ।
২)ব্যঞ্জনধ্বনি:যে ধ্বনি উচ্চারণের সময় স্বাসবায়ু মুখবিবরের কোথাও না কোথাও সম্পূর্ণ বা আংশিক ভাবে বাধা পায় এবং যে ধ্বনি স্বরধ্বনির সাহায্য ছাড়া উচ্চারিত হতে পারেনা তাদেরকে বলা হয় ব্যঞ্জনধ্বনি।
যেমন--ক,খ,গ,ঘ,ঙ ।
মৌলিক স্বরধ্বনির শ্রেণীবিভাগ:
ক)জিহ্বার অবস্থান অনুযায়ী
খ)ঠোঁটের আকৃতিগত পরিবর্তন অনুযায়ী
গ)মুখগহ্বরে শূন্য স্থানের হ্রাসবৃদ্ধি অনুযায়ী
ক) # উচ্চ স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা অপেক্ষাকৃত উঁচুতে অবস্থান করে।যেমন--ই,উ।
# উচ্চমধ্য স্বরধ্বনি:মধ্য স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা উচ্চ -মধ্য অবস্থানে থাকে।
যেমন--এ,ও।
# নিম্ন-মধ্য স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা নিম্ন-মধ্য অবস্থানে থাকে।
যেমন অ্যা,অ।
# নিম্ন স্বর ধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় জিহ্বা নিম্ন অবস্থানে থাকে।
যেমন-আ।
# সম্মুখ স্বরধ্বনি: যেস্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় আমাদের জিভ কিছুটা সামনের দিকে এগিয়ে যায়।
যেমন--ই,এ,অ্যা।
# কেন্দ্রীয় স্বরধ্বনি: যে একটিমাত্র স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় আমাদের জিভ সামনে পিছনে না গিয়ে কেন্দ্রস্থলেই অনড় থাকে।
উদা: আ।
# পশ্চাৎ স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করতে গিয়ে আমাদের জিভ কিছুটা পিছন দিকে সরে যায়।
যেমন--উ,ও,অ।
খ) # প্রসারিত স্বরধ্বনি: ঠোঁট দুটিকে উপর নিচে প্রসারিত করে আমরা যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করি।
যেমন--ই,এ,অ্যা।
# মধ্যস্থ স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় আমাদের ঠোঁট দুটি প্রসারিত বা কুঞ্চিত হয়না।
যেমন--আ।
# কুঞ্চিত স্বরধ্বনি: এমাদের ঠোঁট দুটো ফুঁ দেবার সময় যেমন কুঁকড়ে গিয়ে গোল আকার ধারণ করে সেই অবস্থায় আমরা যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করি।
যেমন--উ,ও,অ।
গ) # সংবৃত স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণ করার সময় জিভ সবচেয়ে উপরে থাকে আর ঠোঁট দুটি সবচেয়ে কম খোলা থাকে
যেমন--ই,উ।
# বিবৃত স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় আমাদের জিভ সবচেয়ে নিচে নেমে আসে আর ঠোঁট দুটি খুব বেশি খুলে যায় ।
যেমন--আ।
# অর্ধবিবৃত স্বরধ্বনি: জযে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় ঠোঁট দুটি বিবৃত স্বরধ্বনির চেয়ে কিছুটা কম খোলা থাকে।
যেমন--অ্যা,অ।
# অর্ধ সংবৃত স্বরধ্বনি: যে স্বরধ্বনি উচ্চারণের সময় ঠোঁট দুটি অর্ধবিবৃতর চেয়েও কিছুটা কম খোলা থাকে।
যেমন--এ,ও।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন